জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গ্রাম্য সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তে দুই সন্তানের জনকের সাথে ৭ মাসের অন্ত:সত্ত্বা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া (১৩)এর বিয়ে হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

গত মঙ্গলবার(১৭ মে) গভীর রাতে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামে অন্ত:সত্ত্বার নিজ বাড়ীতে গ্রাম্য সালিশির সিন্ডিকেট বৈঠকের মাতাব্বরদের এক সিদ্ধান্তে এ বিবাহ হয়েছে।

এ বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরীর পিতা লেবু মিয়া, মাতা ও ভাই সাংবাদিকদের জানান। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মাঝে নানা সমালোচনার ঝড় বইছে।


স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামের লেবু মিয়ার ছেলে ভাংগারী ব্যাবসায়ী আল আমিন(৩০) এর সাথে একই গ্রামের পাশের বাড়ীর ভ্যান চালক চাঁন মিয়ার সানাকইর শেখ খলিলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মেয়ে(১৩) এর সাথে অবৈধ সর্ম্পক গড়ে ওঠে। ওই শিক্ষার্থী ক্রমশ: মাতৃত্বসুলভ লক্ষণ বুঝতে পেরে একপর্যায়ে আল আমিন এর সাথে অবৈধ সম্পর্কে ৬ মাসের অন্তঃসত্বা হয়েছে বলে পরিবার পরিজন কে জানায়। পরে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে উভয় পক্ষের মাঝে সমঝোতার জন্য অন্ত:সত্ত্বা কিশোরীর নিজ বাড়ীতে গ্রাম্য সালীসের সিদ্ধান্তে চার লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে নিকাহ রেজিস্ট্রী করে ছেলের বাড়ীতে পাঠানো হয়।

উক্ত গ্রাম্য সালীশ বেঠকে মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আঃ রহিম বাদশা ভূঁইয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় মাতাব্বর দলু মিয়া সভাপতিত্ব করেন।
এ সময় মাতাব্বর ইসমাইল হোসেন,বাঘা, বল্লা, হাবিবুর, ফারুক ভূঁইয়া , বন্দুক আলী ও নজরুল মুন্সি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রাম্য মাতাব্বরদের এক সিদ্ধান্তে মহাদান ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজী আঃ রউফ লিপন এর সহকারী কাজী সানাকইর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অফিস সহকারী ফজলুল হকের মাধ্যমে চার লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ নিবন্ধন করানো হয়েছে। বিবাহটি পড়ান স্থানীয় মৌলভী মোহাম্মদ আলী।

এ ব্যপারে কিশোরী নিকাহকারী ভাংগারী ব্যাবসায়ী আল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মহাদান ইউনিয়নের কাজী আব্দুর রউফ লিপন বলেন, সানাকইর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অফিস সহকারী ও কথিত আমার সহকারী কাজী হিসেবে ফজলুল হক যদি পরিচয় দিয়ে কাবিন করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।

জানতে চাইলে মহাদান ইউনিয়নের বিট পুলিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা সরিষাবাড়ী থানার এস আই আবু জাফর এর কাছে কয়েকবার মোবাইলে ফোন করলে তার মোবাইল ফোনটি ব্যস্ত পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে নিকাহ রেজিস্ট্রি কারী ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আমি লিটু ভাইয়ের কাছ থেকে বই এনেছি এবং বাদশা মেম্বারের কথামত রেজিস্ট্রি করেছি।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বাদশা ভূঁইয়ার সাথে কথা হলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আমি সহ এলাকার মাতাব্বর গণকে নিয়ে বিয়ের কাবিন ও বিবাহ পড়াইয়া দিছি। তারা এখন ভালভাবে ঘর সংসার করিতেছে।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার পরির্দশক ( তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা।